আগামী ০৩/০৭/২০২৪ তারিখ থেকে সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সময়সূচি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য করণীয় নির্শেনাবলি ইতোমধ্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী ০৩/০৭/২০২৪ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিতব্য ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে বিষয় শিক্ষকগণের জন্য করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
উপরোল্লিখিত এনসিটিবি কর্তৃক প্রেরিত পত্রের আলোকে আগামী ০৩/০৭/২০২৪ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিতব্য ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম-২০২৪ এর বিষয় শিক্ষকগণের জন্য প্রণীত নির্দেশনা মোতাবেক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন - ২০২৪ শিক্ষকগণের জন্য সাধারণ নির্দেশনা
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ অনুযায়ী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম জুলাই মাসে শুরু হতে যাচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতিমূলক নির্দেশনা ইতোমধ্যেই দেয়া হয়েছে। এই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট প্রকল্প/অ্যাসাইনমেন্ট/সমস্যা সমাধান ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করবে এবং তাদের পারদর্শিতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষকরা মূল্যায়ন করবেন। এই কাজ চলাকালে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, কাজের প্রক্রিয়া, ফলাফল, ইত্যাদি সবকিছুই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিবেচিত হবে। এই নির্দেশিকায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কীভাবে পরিচালনা করবেন, কাজের বিভিন্ন ধাপে সংশ্লিষ্ট পারদর্শিতার নির্দেশকে শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা কীভাবে নিরূপণ করবেন, কীভাবে রেকর্ড রাখবেন এবং ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করবেন প্রভৃতির বিস্তারিত নির্দেশনা পরবর্তী অংশে দেওয়া আছে ।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের পদ্ধতি
একটি বিষয়ের মূল্যায়ন এক স্কুল দিবসে/কর্ম দিবসে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করতে হবে।
প্রত্যেক শিক্ষার্থী পূর্বের ন্যায় প্রশ্নপত্রের মত মূল্যায়ন পত্র বা “শিক্ষার্থীর জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা” এর একটি লিখিত কপি পাবে।
একই সাথে মূল্যায়নের লিখিত অংশের জন্য তাদের প্রত্যেককে একটি খাতা/উত্তরপত্র সরবরাহ করবেন।
শুরুতেই নির্দিষ্ট বিষয়ের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কীভাবে পরিচালিত হবে তার নিয়মাবলি শিক্ষার্থীদের জানাবেন।
মূল্যায়নের জন্য একক কাজ, জোড়ায় কাজ, দলগত কাজসহ বিভিন্ন কার্যক্রম থাকার পাশাপাশি লিখিত অংশও থাকবে যা খাতা/উত্তরপত্রে লিখতে হবে। এই বিষয়ে মূল্যায়ন পত্র বা “শিক্ষার্থীর জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা” কপিতে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে।
মূল্যায়ন পত্র বা “শিক্ষার্থীর জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা” অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থী সকল কাজ সম্পন্ন করে শিক্ষককে (প্রত্যবেক্ষককে) জমা দিবে।
শিক্ষকের জন্য নির্দেশনায় মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত কাজসমূহ করার একটা খসড়া সময় বিভাজন দেয়া থাকবে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীর এর চেয়ে সময় বেশি/কম প্রয়োজন হতে পারে। শিক্ষক (প্রত্যবেক্ষক) সেটা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মনে করিয়ে দিতে পারেন কিন্তু কঠিনভাবে এই সময় বিভাজন অনুসরণ করতে হবে তা নয়। সময়ের জন্য শিক্ষার্থী যেন চাপ অনুভব না করে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই প্রকল্পগুলো নির্ধারিত হয়েছে তাই শিক্ষার্থীকে ফ্লেক্সিবিলিটি দিতে হবে। তবে পুরো মূল্যায়ন কার্যক্রম সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মূল্যায়ন কাজ চলাকালীন শিক্ষক (প্রত্যবেক্ষক) নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ ছকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাজের রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন।
এক্ষেত্রে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একজন শিক্ষক নিয়োজিত থাকবেন। তার কাছে পর্যবেক্ষণ হুক (পরিশিষ্ট ১ যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) এবং ২০ জন শিক্ষার্থীর রেকর্ড সংরক্ষণের ছক (পরিশিষ্ট ২ যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) থাকবে।
সামষ্টিক মূল্যায়ন শেষে একজন শিক্ষক (প্রত্যবেক্ষক) তার উপর অর্পিত ২০ জন শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের লিখিত অংশের খাতা, পর্যবেক্ষণ রেকর্ড ছক ও অন্যান্য প্রমাণাদি (যদি থাকে) একত্রে বান্ডেল করে স্বাক্ষরসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকের নিকট জমা দিবেন।
বিষয় শিক্ষক বান্ডেল অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রথমে লিখিত অংশের মূল্যায়ন করবেন। লিখিত অংশের মূল্যায়নের জন্য ছক (পরিশিষ্ট ৩ যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) অনুসরণ করে শিক্ষার্থীর রেকর্ড সংরক্ষণ ছকে (পরিশিষ্ট ৪) শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রার রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন।
বিষয় শিক্ষক নির্ধারিত ছক অনুযায়ী (পরিশিষ্ট ৩ যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) শিক্ষার্থীর লিখিত অংশ মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট ছকে (পরিশিষ্ট ৪ যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন।
বিষয় শিক্ষক পরবর্তীতে প্রত্যবেক্ষক কর্তৃক মূল্য্যায়নের পর্যবেক্ষণ ছক এবং লিখিত অংশের মূল্যায়ন ছকে শিক্ষার্থীর রেকর্ড থেকে সংশ্লিষ্ট PI এ ইনপুট দিবেন।
আর নৈপুণ্যে (অ্যাপস) এই ইনপুট দেয়ার মাধ্যমে ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের কাজ সমাপ্ত হবে।
পূর্বের মতো এবারও প্রতিটি বিষয়ের PI গুলোতে শিক্ষার্থীর রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য একটি ছক পরিশিষ্ট ৫ (যা পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনার সাথে প্রেরণ করা হবে) এ দেয়া হয়েছে। এই ছকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর PI রেকর্ড লিখে সংরক্ষণ করতে হবে, যেন কোনো কারণে নৈপুণ্যে ইনপুট দিতে না পারলে এই ছক দেখে ট্রান্সক্রিপট তৈরি করা যায়। পরবর্তীতে বিষয় শিক্ষকের সুবিধাজনক সময়ে (মূল্যায়ন কার্যক্রম শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে) নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দিতে হবে।
বিষয়ের চাহিদা অনুযায়ী মূল্যায়নের কাজগুলো সম্পন্ন করতে ন্যূনতম যে উপকরণ ও সরঞ্জামাদি প্রয়োজন তা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট শ্রেণিকক্ষে সরবরাহ করবেন। শিক্ষার্থীকে আনতে বা সংগ্রহ করতে বলা যাবে না।
বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের দিন প্রত্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত শিক্ষকের কাজ
যেহেতু প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক (প্রত্যবেক্ষক) মূল্যায়ন চলাকালে নিয়োজিত থাকবেন, সেহেতু সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষক ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষকও প্রত্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিষয় শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী কতজন প্রত্যবেক্ষক প্রয়োজন তা নির্ধারণ করবেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- ষষ্ঠ শ্রেণির একটি শাখায় ৭০ জন শিক্ষার্থী আছে, ষষ্ঠ শ্রেণির বিষয় শিক্ষক এক্ষেত্রে ৪ জন শিক্ষককে প্রত্যবেক্ষক হিসেবে নিতে পারেন। যেখানে ৩ জন প্রত্যবেক্ষক ২০ জন করে শিক্ষার্থী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং ১ জন ১০ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করবেন। কিংবা, ২ জন শিক্ষককে ১৭ জন করে শিক্ষার্থী এবং ২ জন কে ১৮ জন করে শিক্ষার্থী পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তবে লক্ষ্য রাখবেন যে ১ জন প্রত্যবেক্ষক সর্বোচ্চ ২০ জন শিক্ষার্থীর কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন।
এক্ষেত্রে প্রত্যবেক্ষকের কাজ হবে :
১ জন প্রত্যবেক্ষক সর্বোচ্চ ২০ জন শিক্ষার্থীর কাজ পর্যবেক্ষণ করবেন। কাজেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী প্রত্যবেক্ষক কতজন থাকবেন তা নির্ধারিত হবে।
সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য বিষয় শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষকের জন্য দেয়া “বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনা”, শিক্ষার্থীদের দেয়ার জন্য মূল্যায়ন পত্র বা “শিক্ষার্থীর জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা”, পর্যবেক্ষণ ছক (পরিশিষ্ট ১), পর্যবেক্ষণ রেকর্ড সংরক্ষণ ছক (পরিশিষ্ট ২) এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ বুঝে নেবেন।
“শিক্ষকের জন্য বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনা” অনুসরণে প্রত্যবেক্ষক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের খাতা/উত্তরপত্র এবং কাজ বুঝিয়ে দেবেন এবং তার জন্য নির্ধারিত ২০ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ (পরিশিষ্ট ১ অনুসারে) করবেন।
শিক্ষার্থীর জন্য যে মূল্যায়ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পড়তে বলবেন। নির্দেশনা নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা থাকলে তা দূর করতে সহায়তা করবেন। এই মূল্যায়ন চলাকালে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রত্যাশা কী তা যেন তারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
জোড়া, দলগত কাজ বা অন্য কোন কাজ থাকলে শিক্ষকের জন্য নির্দেশনা অনুসরণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য শিক্ষক নির্দেশনা অনুযায়ী বিরতি ও সময় ব্যবস্থাপনা করবেন।
পর্যবেক্ষণ ছক অনুসরণে নির্ধারিত ২০ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করে তার রেকর্ড সংশ্লিষ্ট ছকে (পরিশিষ্ট ২) সংরক্ষণ করবেন। মূল্যায়ন চলাকালে প্রত্যবেক্ষক শিক্ষার্থীদের যেই কাজগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন তা পর্যবেক্ষণ ছকে (পরিশিষ্ট ১) দেয়া রয়েছে। মূল্যায়নের বিভিন্ন ধাপে ঐ কাজগুলোতে আপনার তত্ত্বাবধানে থাকা ২০ জন শিক্ষার্থী কীভাবে অংশগ্রহণ করছে তা পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করে রেকর্ড রাখবেন।
মূল্যায়ন শেষে নির্ধারিত ২০ জন শিক্ষার্থীর লিখিত অংশের খাতা/উত্তরপত্র জমা নেবেন, স্বাক্ষর করবেন এবং তাদের পর্যবেক্ষণ রেকর্ড সংরক্ষণ ছক একত্রে বান্ডিল করবেন। আর যদি কোনো প্রমাণাদি (তৈরিকৃত মডেল, উপস্থাপনার পোস্টার প্রভৃতি) থাকে তাও এর সঙ্গে যুক্ত করে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের নিকট বান্ডেলটি জমা দিবেন।
বিষয় শিক্ষকের কাজ
মূল্যায়নের শুরুতে নির্ধারিত সংখ্যক প্রত্যবেক্ষককে খাতা/উত্তর, পর্যবেক্ষণ ছক, রেকর্ড ছক, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পত্রসহ সংশ্লিষ্ট উপকরণ বুঝিয়ে দিবেন।
উল্লেখ্য মূল্যায়ন পত্র ও নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় নির্দিষ্ট সংখ্যক মূল্যায়ন পত্রের (শিক্ষার্থীর কপি) ফটোকপি, প্রয়োজনীয় সংখ্যক পর্যবেক্ষণ ছক ও রেকর্ড ছক ফটোকপি এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে রাখবেন (মূল্যায়নের আগের দিন)।
বিষয় শিক্ষক নির্বাচিত প্রত্যবেক্ষকগণকে “শিক্ষকের জন্য বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনা” অনুসারে পুরো বিষয়টি বুঝিয়ে দেবেন যেন তারা নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন।
বিষয় শিক্ষক নিজেও ২০ জন শিক্ষার্থীর একটি দলে প্রত্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন।
মূল্যায়ন শেষে প্রত্যবেক্ষকগণ হতে বান্ডিল অনুযায়ী লিখিত উত্তরপত্র, পর্যবেক্ষণ রেকর্ড ছক এবং শিক্ষার্থীর তৈরিকৃত অন্যান্য কাজ প্রভৃতি চেক করে বুঝে নেবেন।
এরপর বান্ডিল অনুযায়ী প্রথমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর লিখিত অংশের খাতা মূল্যায়ন ছক (পরিশিষ্ট ৩) অনুসরণে মূল্যায়ন করে সংশ্লিষ্ট ছকে (পরিশিষ্ট ৪) রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন।
এরপর প্রত্যবেক্ষক (শিক্ষক) দ্বারা পূরণকৃত পর্যবেক্ষণ রেকর্ড সংরক্ষণের ছক (পরিশিষ্ট ২) এবং নিজের করা লিখিত অংশ মূল্যায়ন রেকর্ড সংরক্ষণ ছক (পরিশিষ্ট ৪) পাশাপাশি নিয়ে বিষয় শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাজের চূড়ান্ত মূল্যায়ন করে PI এর মাত্রা নির্ধারণ করবেন। উল্লেখ্য পর্যবেক্ষণ ছক এবং উল্লিখিত অংশ মূল্যায়ন ছকে প্রতিটি সূচক সংশ্লিষ্ট PI এর রেফারেন্স দেয়া আছে।
বিষয় শিক্ষক নৈপুণ্য অ্যাপে PI ইনপুট দেয়ার পাশাপাশি পরিশিষ্ট ৫ এ দেয়া ছক ব্যবহার করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর PI রেকর্ড লিখে সংরক্ষণ করবেন, যেন কোনো কারণে নৈপুণ্যে ইনপুট দিতে না পারলেও এই ছক দেখে ট্রান্সক্রিপট তৈরি করা যায়।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নে ইনক্লুশন নিশ্চিতকরণ
শ্রেণিকক্ষে যদি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিক্ষার্থী (শ্রবণ প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ইত্যাদি) থাকে তাহলে তাদের জন্য শুধু মৌখিক নির্দেশনা না দিয়ে বিকল্প উপায়ে (বোর্ডে লিখে, ছবির মাধ্যমে, ইশারার মাধ্যমে প্রভৃতি) মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো বুঝিয়ে দিন।
দলের প্রত্যেক সদস্য যাতে পরস্পরের প্রতি সহযোগী ভূমিকা পালন করে-তা নিশ্চিত করুন। কোনো শিক্ষার্থী যদি তার শারীরিক, ইন্দ্রিয়জনিত বা অন্য কোনো কারণে দলগত কাজ করার সময় কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তাহলে তার সহপাঠীরা যাতে সহযোগী ভূমিকা পালন করে- তা নিশ্চিত করুন। যেমন একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হলে যেন তার সহপাঠীরা ইশারার মাধ্যমে, ছবি এঁকে বা লিখে তার সাথে যোগাযোগ বা আলোচনা কার্যক্রমটি পরিচালনা করে।
যদি মূল্যায়ন কার্যক্রমের কোনো একটি ধাপের কাজ কোনো একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর পক্ষে তার চাহিদার বিবেচনায় একদমই করা সম্ভব না হয় – তবে তাকে বিকল্প কোনো কাজ করার সুযোগ করে দিন।
কোনো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর লিখিত কাজের জন্য শ্রুতি লেখকের প্রয়োজন পরে তবে তা নিশ্চিত করুন। মনে রাখতে হবে, শ্রুতি লেখক সর্বদাই শিক্ষার্থীর থেকে নিচের গ্রেডের শিক্ষার্থী হতে হবে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য লিখিত কাজে অংশগ্রহণ করা চ্যালেঞ্জ হলে ছবি আঁকার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য যে কোনো কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় বরাদ্দের বিষয়টি প্রত্যবেক্ষক বিবেচনা করবেন।
প্রত্যবেক্ষক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর লিখিত উত্তরপত্র সংগ্রহ করে মূল্যায়নকারী শিক্ষকের কাছে পাঠানোর পূর্বে উত্তরপত্রের ১ম পৃষ্ঠায় ঐ শিক্ষার্থীর প্রতিবন্ধীতার ধরন উল্লেখ করে দিবেন।
লিখিত উত্তরপত্র মূল্যায়নকারী প্রতিবন্ধীতার ধরন অনুযায়ী বিশেষ কিছু চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করে মূল্যায়ন কার্যটি সম্পন্ন করতে হবে যেমন- দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর লিখিত অংশটি একজন শ্রুতি লেখক কর্তৃক লিখিত হয়েছে- যার ফলে লিখিত অংশের বানান ভুল বা বাক্য গঠনজনিত ভুলের দায় ঐ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর নয়। আবার, শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে, শ্রবণের অসুবিধার কারণে ক্রিয়া পদ, সর্বনাম এবং কালের ব্যবহার প্রভৃতিতে অসামঞ্জস্যতা হতে পারে, যা বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে। অন্যদিকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা ছবি এঁকে প্রকাশ করলে তার ভাবার্থ বুঝে মূল্যায়ন করতে হবে।
কোনো বিদ্যালয়ে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী থাকলে তাদের চাহিদা অনুসারে প্রত্যবেক্ষক তাদের মাতৃভাষায় মূল্যায়ন নির্দেশনা ব্যাখ্যা করার ব্যবস্থা নিবেন।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য উপকরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা সাধারণ উপকরণ তালিকা
সাধারণ উপকরণ (সকল | প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে বিষয়ের জন্য প্রযোজ্য)
খাতা/উত্তর (১৬ পৃষ্ঠা), শিক্ষার্থী মূল্যায়ন নির্দেশিকা, সাইনপেন, মার্কার, স্ট্যাপলার, এ ফোর সাইজ কাগজ শিক্ষার্থী নিয়ে কলম, পেন্সিল, ইরেজার, শার্পনার, স্কেল আসবে
বিষয়ভিত্তিক উপকরণ তালিকা
বাংলা: ষষ্ঠ থেকে নবম সকল শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঠ্যবই নিয়ে আসবে।
গণিত: সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী গণিত পাঠ্যবই, পুরোনো ক্যালেন্ডার এর কাগজ, আঠা নিয়ে আসবে
বিজ্ঞান: ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থী অনুসন্ধানী পাঠ ও অনুশীলন বই নিয়ে আসবে
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান: ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আসবে
ডিজিটাল প্রযুক্তি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য কাঁচি (৪/৫টি), আঠা সরবরাহ করবে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটারের ব্যবস্থা করবে (যদি থাকে)।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী খালি ক্যালেন্ডারের পাতা বা অনুরুপ শক্ত কাগজ, পুরনো ফেলে দেওয়া কাগজের বক্স নিয়ে আসবে, শুধুমাত্র সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আসবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা: সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ওজন ও উচ্চতা পরিমাপক' সরবরাহ করবে। শুধু সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঠ্যবই নিয়ে আসবে।
ইসলাম শিক্ষা: সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আসবে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ক্যালেন্ডারর খালি কাগজ নিয়ে আসবে এবং প্রতিষ্ঠান ৪/৫টি রঙ পেন্সিল বক্স সরবারাহ করবে।
হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম ও খ্রিষ্ট ধর্ম: নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য কয়েকদিনের জাতীয়/ স্থানীয় সংবাদপত্র (প্রত্যেক দলের জন্য কয়েকটি করে সরবরাহ করবে।
শিল্প ও সংস্কৃতিঃ সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠান ২০ জনের দলের কাজের জন্য ৪/৫টি রঙ পেন্সিল বক্স, আঠা, কাঁচি ৪/৫টি, রঙিন কাগজ, বিভিন্ন আকৃতির শুকনো পাতা, পরিবেশনায় প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ৪/৫টি গামছা, ৪/৫টি কয়েক রঙের ওড়না সরবরাহ করবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য-ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নে রুটিন অনুসরণ করে প্রতিটি বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের আগেরদিন ওই বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা, শিক্ষার্থীর জন্য নির্দেশনা এবং মূল্যায়নপত্র নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের পোর্টালে প্রেরণ করা হবে।
إرسال تعليق
Please do not enter any spam link in the comment box.