জমি ও ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক পরিবারকে একাধিক মামলায় হয়রানির অভিযোগ | Titas Tribune News | Brahmanbaria News


তিতাস ট্রিবিউন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

জমি ও ব্যবসায়িক বিরোধকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক পরিবারের সদস্যদের একাধিক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য
সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মাছুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং শিক্ষানবীশ আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বাবা সিরাজ মিয়া (৭১), বোন চিকিৎসক মাহমুদা বেগম, ভগ্নিপতি চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ, চাচাতো ভাই ফয়জুর রহমান, ইউনিয়ন কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়ার হোসেন এবং উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শাহবাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম কালন, তাঁর ছেলে জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রুবেল এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জমি ও ব্যবসায়িক বিরোধ চলছে। এ বিরোধের জেরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর ছিদ্দিকের মাধ্যমে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার পাঁয়তারা চলছে।

অভিযোগের বিবরণ
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় এসআই আবু বক্কর ছিদ্দিক তাঁকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরে ১২ নভেম্বর সরাইল থানায় ৪ আগস্টে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সংঘটিত একটি সংঘর্ষের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে মোস্তাফিজুরকে প্রধান আসামি করা হয়। অথচ ওই সময় তিনি অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

পরবর্তীতে ২৪ নভেম্বর আদালত থেকে জামিন পেলেও সরাইল থানায় আরেকটি হত্যা মামলায় তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। জামিনের পরও বারবার নতুন মামলায় জড়িয়ে তাঁর পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

মোস্তাফিজুরের বাবা সিরাজ মিয়া অভিযোগ করেন, তিনি হৃদরোগী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাইরে কখনও যাননি। তবুও তাঁকে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া
ইউনিয়ন কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়ার হোসেন জানান, মোস্তাফিজুরকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এসআই আবু বক্কর ছিদ্দিক পাঁচ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁদের পরিবারকে আরও হয়রানির শিকার হতে হয়।

অপরদিকে, এসআই আবু বক্কর ছিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমি শুধু রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছি। অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।"

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান বলেন, "মামলার তদন্তে মোস্তাফিজুরের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।"

অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম কালনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার তাঁদের নিরাপত্তা ও হয়রানিমূলক মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

Post a Comment

Please do not enter any spam link in the comment box.

أحدث أقدم